Welcome text

নয়াদিল্লি: প্রিপেড গ্রাহকদের জন্য আনলিমিটেড কলের সুবিধা চালু করল ভারতী এয়ারটেল। আজ থেকে এয়ারটেলের গ্রাহকরা এই সুবিধা পাবেন। এর মূল্য ধার্য হয়েছে ৭ টাকা। ৭ টাকার বিনিময়ে এই সুবিধা মধ্যরাত থেকে সকাল ছটা পর্যন্ত পাবেন গ্রাহকরা। কোম্পানির পক্ষ থেকে এই বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে। ১২৯ ডায়াল করে এই সুবিধা অ্যাক্টিভেট করতে পারবেন গ্রাহকরা। কোম্পানি ইতিমধ্যেই একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফেসবুক অ্যাকসেস ফ্রি করেছে। এয়ারটেলের ঘোষণা অনুযায়ী, রাতের জন্য এই আনলিমিটেড কলের সুবিধার মাধ্যমে তাদের প্রিপেড গ্রাহকরা মাত্র ৭ টাকায় লোকাল এয়ারটেল ফোনে মধ্যরাত ১২ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত যতখুশি কথা বলতে পারবেন।একইসঙ্গে এয়ারটেলের এই নাইট স্টোর অনুসারে, গ্রাহকরা মাত্র ৮ টাকায় আনলিমিটেড ২ জি ইন্টারনেট পরিষেবাও পাবেন। কথা বলা ও ইন্টারনেটে- দুটি সুবিধা একত্রে ১৫ টাকায় পাবেন গ্রাহকরা। কোম্পানি জানিয়েছে, কলকাতা,গুজরাত,মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ (পূর্ব),হরিয়ানা,কেরল,পঞ্জাব,ওড়িশায় এয়ারটেল প্রিপেড গ্রাহকরা লোকাল এয়ারটেল ফোনে আনলিমিটেড কল তথা মোবাইল ইন্টারনেট সুবিধা ৯ টাকায় পাবেন। কোম্পানির রাত্রিকালীন ৫০০ এমবি থ্রিজি পরিষেবা ২৯ টাকায় এবং ১ জিবি ৪৯ টাকায় পাবেন গ্রাহকরা।

বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৩

ল্যাবরেটরি


নন্দকিশোর ছিলেন লণ্ডন য়ুনিভার্সিটি থেকে পাস করা এঞ্জিনিয়ার। যাকে সাধুভাষায় বলা যেতে পারে দেদীপ্যমান ছাত্র অর্থাৎ ব্রিলিয়ান্ট, তিনি ছিলেন তাই। স্কুল থেকে আরম্ভ করে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষার তোরণে তোরণে ছিলেন পয়লা শ্রেণীর সওয়ারী।
ওঁর বুদ্ধি ছিল ফলাও, ওঁর প্রয়োজন ছিল দরাজ, কিন্তু ওঁর অর্থসম্বল ছিল আঁটমাপের।
রেলওয়ে কোম্পানির দুটো বড়ো ব্রিজ তৈরি করার কাজের মধ্যে উনি ঢুকে পড়তে পেরেছিলেন। ও-কাজের আয়ব্যয়ের বাড়তি-পড়তি বিস্তর, কিন্তু দৃষ্টান্তটা সাধু নয়। এই ব্যাপারে যখন তিনি ডানহাত বাঁহাত দুই হাতই জোরের সঙ্গে চালনা করেছিলেন তখন তাঁর মন খুঁতখুঁত করে নি। এ-সব কাজের দেনাপাওনা নাকি কোম্পানি-নামক একটা অ্যাবস্ট্রাক্ট সত্তার সঙ্গে জড়িত, সেইজন্যে কোনো ব্যক্তিগত লাভলোকসানের তহবিলে এর পীড়া পৌঁছয় না।
ওঁর নিজের কাজে কর্তারা ওঁকে জীনিয়স বলত, নিখুঁত হিসাবের মাথা ছিল তাঁর। বাঙালি বলেই তার উপযুক্ত পারিশ্রমিক তাঁর জোটে নি। নীচের দরের বিলিতি কর্মচারী প্যান্টের দুই ভরা-পকেটে হাত গুঁজে যখন পা ফাঁক করে ‘হ্যালো মিস্টার মল্লিক’ ব’লে ওঁর পিঠ-থাবড়া দিয়ে কর্তাত্বি করত তখন ওঁর ভালো লাগত না। বিশেষত যখন কাজের বেলা ছিলেন উনি, আর দামের বেলা আর নামের বেলা ওরা। এর ফল হয়েছিল এই যে, নিজের ন্যায্য প্রাপ্য টাকার একটা প্রাইভেট হিসেব ওঁর মনের মধ্যে ছিল, সেটা পুষিয়ে নেবার ফন্দি জানতেন ভালো করেই।
পাওনা এবং অপাওনার টাকা নিয়ে নন্দকিশোর কোনোদিন বাবুগিরি করেন নি। থাকতেন শিকদারপাড়া গলির একটা দেড়তলা বাড়িতে। কারখানাঘরের দাগ দেওয়া কাপড় বদলাবার ওঁর সময় ছিল না। কেউ ঠাট্টা করলে বলতেন, ‘মজুর মহারাজের তকমা-পরা আমার এই সাজ।’
কিন্তু বৈজ্ঞানিক সংগ্রহ ও পরীক্ষার জন্যে বিশেষ করে তিনি বাড়ি বানিয়েছিলেন খুব মস্ত। এমন মশগুল ছিলেন নিজের শখ নিয়ে যে, কানে উঠত না লোকেরা বলাবলি করছে, এত বড়ো ইমারতটা যে আকাশ ফুঁড়ে উঠল— আলাদিনের প্রদীপটা ছিল কোথায়।
এক-রকমের শখ মানুষকে পেয়ে বসে সেটা মাতলামির মতো, হুঁশ থাকে না যে লোকে সন্দেহ করছে। লোকটা ছিল সৃষ্টিছাড়া, ওঁর ছিল বিজ্ঞানের পাগলামি। ক্যাটালগের তালিকা ওলটাতে ওলটাতে ওঁর সমস্ত মনপ্রাণ চৌকির দুই হাতা আঁকড়ে ধরে উঠত ঝেঁকে ঝেঁকে। জর্মানি থেকে আমেরিকা থেকে এমন-সব দামি দামি যন্ত্র আনাতেন যা ভারতবর্ষের বড়ো বড়ো বিশ্ববিদ্যালয়ে মেলে না। এই বিদ্যালোভীর মনে সেই তো ছিল বেদনা। এই পোড়াদেশে জ্ঞানের ভোজের উচ্ছিষ্ট নিয়ে সস্তা দরের পাত পাড়া হয়। ওদের দেশে বড়ো বড়ো যন্ত্র ব্যবহারের যে সুযোগ আছে আমাদের দেশে না থাকাতেই ছেলেরা টেক্সট্‌বুকের শুকনো পাতা থেকে কেবল এঁটোকাঁটা হাতড়িয়ে বেড়ায়। উনি হেঁকে উঠে বলতেন, ক্ষমতা আছে আমাদের মগজে, অক্ষমতা আমাদের পকেটে। ছেলেদের জন্যে বিজ্ঞানের বড়ো রাস্তাটা খুলে দিতে হবে বেশ চওড়া ক’রে, এই হল ওঁর পণ।
দুর্মূল্য যন্ত্র যত সংগ্রহ হতে লাগল, ওঁর সহকর্মীদের ধর্মবোধ ততই অসহ্য হয়ে উঠল। এই সময়ে ওঁকে বিপদের মুখ থেকে বাঁচালেন বড়োসাহেব। নন্দকিশোরের দক্ষতার উপর তাঁর প্রচুর শ্রদ্ধা ছিল। তা ছাড়াও রেলওয়ে কাজে মোটা মোটা মুঠোর অপসারণদক্ষতার দৃষ্টান্ত তাঁর জানা ছিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

^ Back to Top